বরমচাল ফুটবলের অমর কিংবদন্তি, যাঁর খেলা আজও প্রেরণার উৎস এবং নতুন প্রজন্মের জন্য এক অবিস্মরণীয় উদাহরণ।
“আনার আহমেদ — বরমচাল ফুটবল ইতিহাসের সেই অমর নাম, যাঁর খেলা কেবল মাঠেই সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং ছড়িয়ে ছিল হাজারো হৃদয়ে। তিনি ছিলেন এমন একজন ডিফেন্ডার, যিনি প্রতিপক্ষের আক্রমণ থামাতেন আত্মবিশ্বাস দিয়ে, আর দলের মাঝে ছড়িয়ে দিতেন এক শক্তি ও স্থিরতার বার্তা। তাঁর ডিফেন্স লাইনে দাঁড়ালেই যেন বলের গতি হারিয়ে যেত। তাঁর উপস্থিতি মাঠে মানেই ছিল নিরাপত্তা, সাহস আর দৃঢ়তা।
একটা সময় ছিল, যখন বরমচালের কোনো বড় ম্যাচ মানেই ছিল আনার ভাইয়ের নেতৃত্বে এক অটুট রক্ষণভাগ। স্ট্রাইকাররা তাঁর সামনে দাঁড়াতে সাহস পেত না, আর গোলরক্ষক জানতো — আজ রক্ষা আছে, কারণ সামনে দাঁড়িয়ে আছে ‘আনার ভাই’।
তাঁর পায়ের কাজ, মাঠে অবস্থান বুদ্ধি, এবং নিখুঁত ট্যাকলিং দেখে বোঝা যেত, ফুটবল তার মগজে নয়, হৃদয়ে ছিল। আর আজ, এতগুলো বছর পরও যখন তিনি প্রবাস থেকে দেশে ফিরে মাঠে নামেন, তখনও সেই আগের মতই বল কন্ট্রোল, সেই একই শারীরিক উপস্থিতি, আর সেই চোখ ধাঁধানো ফুটবল সেন্স — যেন সময়ও তাঁর সামনে হেরে গেছে।
গতকালের প্রীতি ম্যাচ এবং সাম্প্রতিক আন্তঃইউনিয়ন টুর্নামেন্টে যেভাবে তিনি নিজের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতায় পুরো মাঠ কাঁপিয়েছেন, তা দেখে নতুন প্রজন্ম চোখ কপালে তুলেছে। তারা তখন বুঝতে পেরেছে, কেন আগের প্রজন্ম তাঁকে নিয়ে এত গর্ব করত।
আনার আহমেদ শুধু একজন ফুটবলার নন — তিনি এক প্রতিষ্ঠান। তাঁর খেলার প্রতি নিষ্ঠা, ক্লাব ও এলাকার প্রতি ভালোবাসা, আর মাঠে অবদানের গুরুত্ব যতই বলি, কম বলা হয়। যদি তিনি প্রবাসে না যেতেন, তবে হয়তো আজ দেশের জাতীয় ফুটবলে তাঁর নাম আমরা গর্বের সাথে উচ্চারণ করতাম। তবে তাতে কিছু আসে যায় না — কারণ আমাদের কাছে তিনি এখনো জাতীয় গর্ব, বরমচালের মাঠে একজন সত্যিকারের ‘ফুটবল সৈনিক’।
আনার আহমেদ নামটি কেবল অতীতের গৌরব নয় — এটি আজকের প্রেরণা, আগামী প্রজন্মের জন্য এক উদাহরণ, এবং চিরকাল বরমচালের ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে উজ্জ্বল এক অধ্যায়।”
প্রতিবেদক: রিফাত ইসলাম