1. info@www.awazsylhet.com : - :
বৃহস্পতিবার, ০৮ মে ২০২৫, ০৫:৫৫ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
“আনার আহমেদ: বরমচালের ফুটবলের অমর কিংবদন্তি, যিনি নতুন প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা” রৌমারীতে ভয়ংকর মামলাবাজ প্রভাষক আবুল হাশেমের আতঙ্কে এলাকবাসী ঠাকুরগাঁওয়ে ভারতীয় বিএসএফের হাতে ৪জন বাংলাদেশি নাগরিক আটক। ঠাকুরগাঁওয়ে একজনের কদমগাছে আত্মহত্যা। ঠাকুরগাঁও-২ আসনের আওয়ামীলীগের এমপি ফের কারাগারে প্রেরণ শার্শার বাগআঁচড়া থেকে ১০ পিস স্বর্ণের বারসহ এক পাচারকারী আটক। হরিপুরে লক্ষাধিক মানুষের ভূমি সেবা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে ঠাকুরগাঁওয়ে রানীশংকৈলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট এক মাদ্রাসা শিক্ষকে মৃত্যু। শার্শা সিমান্তে ১টি দেশী পিস্তল ৭ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে বিজিবি। ঠাকুরগাঁওয়ে রাণীশংকৈলে ভিন্ন আয়োজনে ১মে দিবস উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র‌্যালি ও আলোচনা সভা

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে লাউয়াছড়ায় পর্যটকের ভিড়ে অস্বস্তিতে বন্য প্রাণীরা

উৎসবের আলো
  • প্রকাশিত: রবিবার, ১৯ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ৭৯ বার পড়া হয়েছে

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান উদ্ভিদ ও প্রাণবৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ সংরক্ষিত একটি বনাঞ্চল। এই বনে অনেক বিরল ও বিলুপ্তপ্রায় প্রাণ-প্রজাতির বসবাস। আছে নানা জাতের উদ্ভিদ। দেশ-বিদেশের পর্যটক ও প্রকৃতিপ্রেমিকদের প্রিয় দর্শনীয় স্থান এটি। প্রায় প্রতিদিনই কমবেশি পর্যটক ভিড় করেন লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে। এতে অস্বস্তির মধ্যে পড়ে বন্য প্রাণী।

ছুটির দিনে লাউয়াছড়ায় পর্যটকের ভিড় উপচে পড়ে। টানা ছুটির সময় সেই ভিড় কয়েক গুণ বেড়ে যায়। পর্যটকের এমন ভিড়ে অনেক প্রাণীই তখন আড়ালে-আবডালে লুকিয়ে সময় যাপন করে। বন্য প্রাণীর বাস্তুসংস্থান ও নিরাপদ জীবনযাপন বাধাগ্রস্ত হয়। তারা অতিষ্ঠ ও অস্বস্তি ভোগ করে। দিনে কত সংখ্যক পর্যটকের প্রবেশ ও উপস্থিতি বন্য প্রাণী এবং পরিবেশের জন্য সহনীয়, এখনো তা নির্ধারণ করা হয়নি। যার কারণে ভিড় নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হচ্ছে না। গত বছর দেড় লাখের বেশি পর্যটক লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে প্রবেশ করেছেন।

পরিবেশকর্মী ও লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান ইকো ট্যুর গাইড সাজু মারছিয়াং বলেন, ছুটির দিনগুলোতে বনের পরিবেশ খুবই খারাপ থাকে। পর্যটকের ভিড়ে বন্য প্রাণীদের দেখা পাওয়া দুঃসাধ্য হয়ে ওঠে। মাঝেমধ্যে যা–ও দেখা যায়, মানুষের হইহুল্লোড়ের কারণে বন্য প্রাণীরা অস্বস্তিতে থাকে। অনেক সময় দেখা যায়, গাছে থাকা প্রাণীদের খাবারের লোভ দেখিয়ে নিচে নামানো হচ্ছে, যা বন্য প্রাণীদের খাদ্যাভ্যাসে প্রভাব ফেলছে। অনেকে কাছে গিয়ে ছবি তুলতে চায়। মাঝেমধ্যে প্রাণীর আক্রমণের শিকারও হতে হয় অনেক পর্যটককে। তিনি আরও বলেন, এখনই পর্যটক নিয়ন্ত্রণ করা দরকার। তা না হলে উদ্যানের প্রাণ-প্রকৃতি বিপজ্জনক পর্যায়ে চলে যাবে। শুধু হল্লা-চিৎকারই করা হচ্ছে, তা নয়। পলিথিন, প্লাস্টিক ফেলে পরিবেশকেও ধ্বংস করা হচ্ছে।

গত ১৩ ও ১৪ ডিসেম্বর ছুটির দিনে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে প্রচুর পর্যটকের ভিড় দেখা গেছে। পর্যটকদের বেশির ভাগই ছোট-বড় দলে এসেছেন। তাঁরা বনের ভেতর দিয়ে যাওয়া ঢাকা-সিলেট রেললাইনে ও বনের ভেতরের বিভিন্ন স্থানে ভিড় করে হইচই করেন। পরিবেশ, প্রাণ-প্রকৃতির জন্য যা অনুচিত। ছুটির দিনগুলোতে পর্যটকদের এমন ভিড় ও হইচই প্রায়ই হয়ে থাকে।

বন বিভাগের বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ, ট্যুর গাইড ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বছর শেষে স্কুল ও কলেজ বন্ধ থাকলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ছোট-বড় দলে লাউয়াছড়ায় ঘুরতে আসেন। পরিবারের সদস্যরাও একসঙ্গে ঘুরতে লাউয়াছড়াকে বেছে নেন। ঘুরতে আসেন বিভিন্ন করপোরেট প্রতিষ্ঠানের লোকজনও। বনের ভেতর দিয়ে যাওয়া শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ (ভানুগাছ) সড়কে পর্যটকদের যানবাহনের ভিড় লেগে থাকে। গাড়ির শব্দ, হর্ন ও মানুষের আনাগোনায় প্রাণীদের প্রাকৃতিক নীরবতা ভাঙে, তারা বিরক্ত হয়।

বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও উদ্ধারের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন স্ট্যান্ড ফর আওয়ার এনডেঞ্জার্ড ওয়াইল্ডলাইফের (সিউ) অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সোহেল শ্যাম বলেন, ‘লাউয়াছড়ায় অনেক ট্যুরিস্ট আসেন ছবি তুলতে, হইচই করতে। লাউয়াছড়া আসলে বন্য প্রাণীর জায়গা। তাদের জায়গায় গিয়ে চেঁচামেচি করা কতটুকু ঠিক। মানুষের ভিড়, চেঁচামেচিতে অনেক প্রাণীর প্রজনন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে কি না, এটা গবেষণার বিষয়। দেখা গেছে, উল্লুক ডাকছে। তখন পর্যটকেরাও উল্লুকের সঙ্গে ডাকছেন।’

সোহেল শ্যাম আরও বলেন, ‘আমরা বারবার বলি, প্রতিদিন কতজন ট্যুরিস্ট ঢুকবে, নির্ধারণ করে দেওয়া হোক। পর্যটকদের অবাধ প্রবেশ সীমিত করা হোক। ট্যুরিস্টরা ট্যুর গাইড নিয়ে ঢুকবে। ঢোকার আগে ট্যুরিস্টদের বনের ভেতর কী রকম আচরণ করা যাবে, তা জানিয়ে দেওয়া হবে। ট্যুরিস্টরা বন ধ্বংসী কাজ করলে গাইডদের লাইসেন্স বাতিল করা হবে। ট্যুরিস্টদেরও জরিমানার ব্যবস্থা থাকবে।’

গত বছর লাউয়াছড়ায় ১ লাখ ৫১ হাজার ৫৭১ জন পর্যটক প্রবেশ করেছেন এবং ৯৮ লাখ ৭০ হাজার ৭৮২ টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে বলে জানিয়েছে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের সহব্যবস্থাপনা কমিটির কার্যালয়।

ব্যন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের তথ্যমতে, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের আয়তন ১ হাজার ২৫০ হেক্টর। সরকার ১৯৯৬ সালে লাউয়াছড়াকে জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করে। উদ্যানটি ১৬৭ প্রজাতির গাছ, ২৪৬ প্রজাতির পাখি, ২০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ৫৯ প্রজাতির সরীসৃপ (৩৯ প্রজাতির সাপ, ১৮ প্রজাতির লিজার্ড, ২ প্রজাতির কচ্ছপ), ২২ প্রজাতির উভচরসহ অসংখ্য বিরল ও বিপন্ন প্রজাতির বন্য প্রাণীর আবাসস্থল ও প্রজননক্ষেত্র।

বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক জামিল মোহাম্মদ খান বলেন, ছুটির দিনে পর্যটক একটু বেশি থাকেন। তাঁদের চিন্তাভাবনা আছে, সক্ষমতা ঠিক করার। তবে ওপর থেকে এ বিষয়ে কোনো নির্দেশনা নেই। মৌখিকভাবে লাউয়াছড়ায় বনভোজন না করতে বলা হয়েছে। লাউয়াছড়া মূলত বন্য প্রাণী ও বন সংরক্ষণের জন্য। বন, বন্য প্রাণী না থাকলে একসময় এখানে কেউ আসবে না। তিনি আরও বলেন, পর্যটকদের গাড়ি পার্কিংয়ের স্থান নেই। বনের ভেতর দিয়ে সড়ক গেছে, এই সড়কে যানবাহনের ২০ কিলোমিটার গতি নির্ধারণ করা আছে। কিন্তু এটা কেউ মানতে চায় না।

লাউয়াছড়া উদ্যানের টিকিট কাউন্টার সূত্রে জানা যায়, গত ১২ ডিসেম্বর ৫৭৯ জন পর্যটক এসেছিলেন উদ্যানে। ১৩ ডিসেম্বর ছুটির দিনে পর্যটক ছিলেন দ্বিগুণের বেশি, অর্থাৎ ১০ জন বিদেশিসহ ১ হাজার ৩৬৯ জন পর্যটক। ১৪ ডিসেম্বর (শনিবার) ৩ জন বিদেশিসহ ১ হাজার ৭২৭ জন পর্যটক ছিলেন। এই ৩ দিনে ৩ হাজার ৬৭৫ জন পর্যটক লাউয়াছড়ায় প্রবেশ করেন। রাজস্ব আদায় হয়েছে মোট ৩ লাখ ৫৫ হাজার ৮৬৭ টাকা।

 

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইন্টেল ওয়েব