
মোঃ মুকিম উদ্দিন জগন্নাথপুর প্রতিনিধিঃ-
জগন্নাথপুর-শান্তিগঞ্জ নিয়ে গঠিত সুনামগঞ্জ-৩ আসনে জামায়েতে ইসলামীর নেতৃত্বাধীন আট দলীয় জোটের প্রার্থী কে? জামায়াতে ইসলামীর এডভোকেট ইয়াছিন খান না বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের অ্যাডভোকেট মাওলানা শাহীনুর পাশা।
শনিবার পর্যন্ত এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন এই জোটের নেতারা। শনিবার সিলেটে আট দলীয় জোটের সমাবেশের আগে এবং পরে এই আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী দুই দলের দুই নেতাই কেন্দ্রীয় নেতাদের নানা ভাবে দৃষ্টি কাড়ার চেষ্টা করেছেন।
জগন্নাথপুর উপজেলার পাটলী গ্রামের বাসিন্দা মাওলানা শাহীনুর পাশা এক সময় জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতা ছিলেন। সংগঠনের কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়ামের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। সুনামগঞ্জ-৩ নির্বাচনী এলাকা থেকে জমিয়তের প্রার্থী হয়ে চার বার জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন শাহীনুর পাশা। ২০০৫ সালের জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি জোটের প্রার্থী হয়ে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। একবছর সংসদ সদস্যের দায়িত্ব পালন করেন জগন্নাথপুর ও শান্তিগঞ্জ এলাকার।
২০২৪ সালের সাত জানুয়ারির নির্বাচনে তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী হিসেবে (সোনালী আাঁশ প্রতীক) নির্বাচনে অংশ নিয়ে জামানত হারান পাশা। এরআগে ২০২৩ সালের ২৫ নভেম্বর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করাসহ শৃঙ্খলাবিরোধী অবস্থানের কারণে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম থেকে বহিস্কার করা হয় শাহীনুর পাশাকে। সর্বশেষ ২০২৪ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসে যোগদান করেন। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস আটদলীয় জোটের শরিক হওয়ায় তিনি এই আসনে জোটের প্রার্থী হতে চাইছেন। নির্বাচনী এলাকায় সভা-সমাবেশ গণসংযোগ করছেন গেল ছয় মাস ধরেই।
শাহীনুর পাশা বললেন, ছয়বার জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। একবার এমপি ছিলাম। জোটের অন্য দলের সকলেই নতুন মুখ। অভিজ্ঞতার বিষয়টি বিবেচনা করেই জোটের মনোনয়ন দেওয়া হবে আশাকরছি। আমার দলের নেতৃবৃন্দ আমাকে মাঠে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন। ৩৫ বছর ধরে মঠে আছি। এমন কোন গ্রাম নেই, যেখানে আমার কর্মী, সমর্থক-শুভানুধ্যায়ী নেই। আমার সাবেক দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলামেরও এখানে প্রার্থী নেই। জমিয়তের নেতা কর্মীদের সঙ্গেও আমি যোগাযোগ রাখছি, তারাও নিশ্চয়ই আমাকে মমতার দৃষ্টিতেই নেবেন।
জগন্নাথপুরের পাইলগাঁও ইউনিয়নের খানপুর গ্রামের বাসিন্দা অ্যাডভোবেকট ইয়াসীন খান জামায়েতের মজলিশে শুরা’র সদস্য, সিলেট মহানগরের পেশাজীবী থানা আমীর। সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী ইয়াসীন খানও গেল প্রায় এক বছর ধরেই নির্বাচনী এলাকার জগন্নাথপুর ও শান্তিগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করছেন।
এডভোকেট ইয়াসীন খান বললেন, নির্বাচনী এলাকায় গণসংযোগে আছি আমরা দুইজনেই (শাহীনুর পাশা ও ইয়াসীন খান)। তবে দল এবং জোট নিশ্চয়ই ত্যাগ ও গ্রহণযোগ্যতার বিষয়টি ভেবে মনোনয়ন দেবেন। ২০২৪ সালের সাত জানুয়ারির নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ডামি প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ এবং পহেলা আগস্ট শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে ফ্যাসিস্ট সরকারের কাছে আনুগত্য প্রকাশ করে বিতর্কিত হয়েছেন শাহীনুর পাশা বলে মন্তব্য করেন তিনি। এরপর জনগণ তাকে (শাহীনুর পাশাকে) গ্রহণ করবে কী না এটাও ভাবার বিষয় রয়েছে বলে জানান এই জামায়েত নেতা।
সুনামগঞ্জ জেলা জামায়েতের আমীর মাওলানা তোফায়েল আহমেদ খান বললেন, সুনামগঞ্জ-৩ আসনে শনিবার পর্যন্ত জোটের প্রার্থী চূড়ান্ত হয় নি। দ্রুতই জোটের প্রার্থীতার ঘোষণা আসবে বলে জানান এই দায়িত্বশীল নেতা।