প্রেমের সম্পর্ক মেনে না নেওয়ায় প্রেমিকার ঘরের বারান্দায় ঝুলে প্রেমিক মিজানুর রহমান (১৮) নামের এক যুবক আত্মহত্যা করেছে। সে ধর্মপাশা উপজেলার বাদশাগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থী ছিল।
শুক্রবার পৌনে ৯টায় সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের মুদাহরপুর গ্রামে এঘটনা ঘটে। মিজানুর ওই গ্রামের মৃত আলাল উদ্দিনের ছেলে।
তবে শনিবার সকাল সাড়ে ১১টায় মিজানুরের লাশ সামনে রেখে সংবাদ সম্মেলন করেন তার পরিবার। এতে দাবি করেন মিজানুরকে পরিকল্পিতভকবে হত্যা করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখত বক্তব্য পাঠ করে নিহতের আরেক মামা আবুল হোসেন বলেন, মিজানুর ও মেয়েটি একই গ্রামের বাসিন্দা, তারা একে ওপরের মামাতো ফুফাতো ভাই বোন। তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিষয়টি মেয়ের বাবা মা জানতে পেরে গেত ১৯ মে মিজানুরকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে মারধর করে। পরে মিজানুর ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নেয়। এর দুইদিন পর মিজানুর রহমানকে আসামি করে মেয়েটির বাবা ধর্মপাশা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
পরে বিষয়টি মিমাংসা করে দেওয়ার জন্য মোদাহরপুর গ্রামের জুলফিকার আলী ভূট্টো, নূরুল ইসলাম, মেয়ের মামা দুলাল মিয়া ভয়ভীতি দেখিয়ে মিজানুরের পরিবারের কাছে দুই লাখ টাকা দাবি করা হয়। এ বিষয়গুলোর চাপ সইতে না পেরে গত বৃহস্পতিবার রাতে মিজানুর কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। পরে শুক্রবার সকালে মেয়ের ঘরের বারান্দা থেকে মিজানুরের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। আমাদের ধারনা মিজানুরকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মেয়ের বাড়িতে ডেকে নিয়ে মারধর পর হত্যা করে মেয়ের মায়ের শাড়ি দিয়ে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।
এঘটনায় মিজানুরের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় হত্যা মামলা করতে চাইলে ধর্মপাশা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আলী ফরিদ আহমেদ ও ধর্মপাশা থানার ওসি মোহাম্মদ এনামুল হক মামলা নেয়নি।
তার মরদেহ উদ্ধারের সময় তার হাতে লিখা একটি চিরকুটও উদ্ধার করে পুলিশ। চিরকুটে লিখা, এর জন্য দায়ি জুলিফিকার আলী ভুট্টো, সামিম ভাই, আবদুল নুর, নূরুল ইসলাম, তার বউ রুমা, আলিম, বিউটি আক্তার, তারা হচ্ছে আমার মৃত্যুর কারণ।
তবে জুলফিকার আলী ভূট্টো বলেন, তাদের পারিবারিক ব্যাপারে আমি টাকা দাবি করবো বিষয়টি হাস্যকর। প্রতিহিংসাবশত আমার নাম জড়াচ্ছে।
ধর্মপাশা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আলী ফরিদ আহমেদ বলেন, এ ব্যাপারে থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। এক বিষয়ে দুটি মামলা হয়না। তবে ময়নাতদন্ত রিপোর্টে হত্যা প্রমাণিত হলে মামলা নেওয়া হবে।