1. info@www.awazsylhet.com : - :
সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:২৮ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
যথাযোগ্য মর্যাদায় ঠাকুরগাঁও জেলা পুলিশের উদ্যোগে পালিত শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস সাতশতাধিক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে কর্মধা ট্রাস্ট মেধাবৃত্তি ২০২৫ পরীক্ষা সফলভাবে সম্পন্ন ভাড়া নিয়ে বের হয়ে আর ফেরা হয়নি, কেশবখালী নদীর পাড়ে মিলল সিএনজি চালকের লাশ জগন্নাথপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত জগন্নাথপুরে অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইস টু অভিযানে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা গ্রেফতার রাজশাহীতে পুরোহিতকে মারধর জগন্নাথপুরে হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের কমিটি ও কৃষক নিয়ে গণশুনানি অনুষ্ঠিত ঢাকা–৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী হাদির ওপর হামলার ঘটনায় রাণীশংকৈলে বিক্ষোভ মিছিল ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন তারেক রহমান বেনাপোলের লাইট পোস্টের খাম্বায় ধাক্কা লেগে মোটরসাইকেল আরোহী নিহত।

আপনজনের বিশ্বাসঘাতকতাই সবচেয়ে ভয়ংকর: ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি

আওয়াজ সিলেট
  • প্রকাশিত: রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ২০৪ বার পড়া হয়েছে
সাদ্দাম থেকে ইন্দিরা, বঙ্গবন্ধু থেকে বাদশাহ ফয়সাল—পতনের নেপথ্যে কাছের মানুষেরই হাত


 

ইতিহাসের পৃষ্ঠায় পৃষ্ঠায় এক ভয়াবহ সত্য বারবার প্রতিফলিত হয়েছে—কোনও সাম্রাজ্য কিংবা কোনো মহান নেতার পতন ঘটে তার শত্রুর হাতে নয়, বরং সবচেয়ে কাছের মানুষের বিশ্বাসঘাতকতায়।
শত্রুর হাতে নয়, বরং কাছের মানুষের বিশ্বাসঘাতকতার কারণেই ধ্বংস হয়েছে বহু সাম্রাজ্য, প্রাণ হারিয়েছেন বহু বিশ্বনেতা। সাদ্দাম হোসেন, ইন্দিরা গান্ধী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কিংবা সৌদি বাদশাহ ফয়সাল—প্রত্যেকের পরিণতিই ইতিহাসকে একই শিক্ষা দিয়েছে: “শত্রু প্রতারণা করে না, বিশ্বাসঘাতকতা করে আপনজন।”
সাদ্দামের মৃত্যু: বৈপরীত্যের প্রতিচ্ছবি
২০০৬ সালে ফাঁসির দণ্ড কার্যকরের পর সাদ্দাম হোসেনের মরদেহ রাখা হয়েছিল প্রকাশ্যে —সেখানে উপস্থিত কিছু ইরাকি নাগরিক ক্ষোভ প্রকাশ করতে মৃতদেহের ওপর থুতু নিক্ষেপ করে। পক্ষান্তরে, সাদ্দামের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ১২ জন মার্কিন সেনার প্রত্যেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। এই বৈপরীত্য আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়—শত্রুর চেয়ে কাছের মানুষই কখনও কখনও হয়ে ওঠে সবচেয়ে নির্মম।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, “এটি ছিল প্রতীকী চিত্র—শত্রুদের আবেগ, আর কাছের মানুষদের ঘৃণা।”
ইন্দিরা গান্ধীর পরিণতি: নিজের দেহরক্ষীর হাতে
ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর ক্ষেত্রেও ঘটেছিল একই পরিণতি। তিনি শত্রুর হাতে নিহত হননি, নিজের দেহরক্ষীর গুলিতেই প্রাণ হারান।
১৯৮৪ সালের ৩১ অক্টোবর সকালে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী তাঁর বাসভবনে প্রবেশ করছিলেন। হঠাৎ করেই গুলি চালান তাঁর দুই দেহরক্ষী।
ভারতের ইতিহাসের এই অধ্যায় দেখায়—সবচেয়ে বিশ্বস্তজনও মুহূর্তে হয়ে উঠতে পারে মৃত্যুর কারণ।
বঙ্গবন্ধুর ১৫ আগস্ট: এক রক্তাক্ত বিশ্বাসঘাতকতা
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়।
ঘটনার নেপথ্যে ছিলেন খন্দকার মোশতাক—
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়।
যে খন্দকার মোশতাক বঙ্গবন্ধুর পরিবারের খুব ঘনিষ্ঠ ছিলেন—যিনি কখনও শোকে পাশে দাঁড়িয়েছেন, কখনও আনন্দে দায়িত্ব নিয়েছেন, যিনি বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠজন, তাঁর বাবার জানাজায় অংশ নিয়েছেন, পরিবারের সুখ-দুঃখ ভাগ করে নিয়েছেন, এমনকি হত্যাকাণ্ডের আগের দিন বঙ্গবন্ধুর জন্য খাবার রান্না করে বাসায় পৌঁছে দিয়েছিলেন—সেই মানুষই পরের দিন বিশ্বাসঘাতকতার মাধ্যমে ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের নেতৃত্ব দেন।
বাদশাহ ফয়সালের হত্যাকাণ্ড: আলিঙ্গন থেকে গুলির ঝাঁঝরা
১৯৭৫ সালের মার্চে সৌদি বাদশাহ ফয়সাল যখন তাঁর ভাইপোকে আলিঙ্গনের জন্য হাত বাড়ান, তখনই ভাইপো পিস্তল বের করে গুলি চালায়।
তৎক্ষণাৎ প্রাণ হারান সৌদি আরবের তৎকালীন রাজা।
বিশেষজ্ঞ মতামত, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, বিশ্বাসঘাতকতার ইতিহাস মানুষকে একটি শিক্ষা দেয়—
“সবচেয়ে কম সন্দেহজনক ব্যক্তিকেই সবচেয়ে বেশি সন্দেহ করতে হয়। কারণ, শত্রু কখনও আপনজনের মুখোশ পরে কাছে আসে না; কিন্তু আপনজনই একদিন হয়ে ওঠে সবচেয়ে বড় শত্রু।”
তাই ব্যক্তিগত জীবনেও সবচেয়ে বড় আঘাত ও কষ্ট আসে পরিচিতদের কাছ থেকে। এক তালিকা করলে দেখা যাবে, যারা সবচেয়ে বেশি কষ্ট দিয়েছে তারা শত্রু নয়, বরং কাছের মানুষ।
রাজনৈতিক ইতিহাসবিদরা বলেন:
“গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সবসময় শেখায়—সবচেয়ে কম সন্দেহজনক ব্যক্তিকেই বেশি নজরে রাখতে হবে। কারণ সবচেয়ে বড় আঘাত আসে কাছের মানুষের হাত থেকে।”
“শত্রু কখনও বন্ধু সাজে না, কিন্তু বন্ধুই একদিন হয়ে ওঠে সবচেয়ে বড় শত্রু।”
ব্যক্তিগত জীবনের শিক্ষা: ইতিহাস যেমন প্রমাণ করেছে, তেমনি ব্যক্তিগত জীবনেও দেখা যায়—সবচেয়ে বড় কষ্ট ও আঘাত আসে কাছের মানুষের হাত থেকেই।
শত্রুরা কখনও বিশ্বাসঘাতক হয় না; বিশ্বাসঘাতকতা করে কেবল আপনজন।
ইতিহাসের শিক্ষা তাই একটাই: জীবনের সবচেয়ে বড় শত্রু কখনও দূরে থাকে না, সে থাকে সবচেয়ে কাছেই—বন্ধু কিংবা আপনজনের ছদ্মবেশে।
  • টাইমলাইন: বিশ্বাসঘাতকতার নির্মম ইতিহাস
  • ১৯৭৫ (আগস্ট): বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত
  • ১৯৭৫ (মার্চ): বাদশাহ ফয়সাল নিহত ভাইপোর গুলিতে
  • ১৯৮৪ (অক্টোবর): দেহরক্ষীর হাতে নিহত ইন্দিরা গান্ধী
  • ২০০৬ (ডিসেম্বর): সাদ্দাম হোসেনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর; নিজ দেশের নাগরিকদের ঘৃণা, শত্রু সেনাদের কান্না

 

ব্যক্তিগত জীবনের শিক্ষা, শুধু ইতিহাস নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও এই শিক্ষা প্রযোজ্য। যে তালিকায় আমরা সবচেয়ে বেশি কষ্টদাতাদের নাম লিখব, দেখা যাবে তারা শত্রু নয়—কাছের মানুষ।

ইতিহাস একটাই সত্য বারবার শিখিয়েছে—
সবচেয়ে বড় বিশ্বাসঘাতকতা আসে সবচেয়ে আপন মানুষের কাছ থেকেই।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইন্টেল ওয়েব