মোঃ নাজমুল ইসলাম, প্রতিনিধি, আওয়াজ সিলেট:-
রাজস্থানের আজমেরে বসবাসকারী এক নারী তার প্রথম স্বামী থেকে জন্ম নেওয়া কন্যা সন্তানকে নিয়ে সঙ্গীর কটূক্তিতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিলেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, নিজের তিন বছরের মেয়েকে ঘুম পাড়ানোর জন্য লোরি গাওয়ার পর তিনি শিশুটিকে নিয়ে হেঁটে যান হ্রদের ধারে। সবকিছু স্বাভাবিক মনে হলেও হঠাৎ করেই তিনি কন্যাটিকে হ্রদে ফেলে দেন এবং পরে অভিনয় করতে থাকেন যে, মেয়ে নাকি “হঠাৎ হারিয়ে গেছে”।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ওই নারী স্বামীকে ছেড়ে অন্য এক পুরুষের সঙ্গে আজমেরে বসবাস করছিলেন। মেয়েকে নিয়ে সঙ্গীর কটূক্তিতে বিরক্ত হয়ে তিনি এমন ভয়াবহ পদক্ষেপ নেন।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাতে টহলকালে হেড কনস্টেবল গোবিন্দ শর্মা রাস্তার উপর এক দম্পতিকে দেখে তাদের জিজ্ঞাসা করেন। ওই নারী, যিনি নিজেকে অঞ্জলি বলে পরিচয় দেন, দাবি করেন তিনি মেয়েকে নিয়ে বের হয়েছিলেন, কিন্তু পথেই হঠাৎ মেয়েটি নিখোঁজ হয়ে যায়। সারারাত খুঁজেও পাননি বলে জানান তিনি।
পরে পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজে দেখতে পায়, অঞ্জলি (ওরফে প্রিয়া) কোলের শিশুকে নিয়ে আজমের শহরের আনা সাগর লেকের ধারে হাঁটছেন। কিছুক্ষণ পর রাত ১টা ৩০ মিনিটে তাকে একা মোবাইল ফোনে ব্যস্ত অবস্থায় ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়। ভিডিওচিত্র তার বক্তব্যের সঙ্গে মেলেনি, ফলে সন্দেহের সৃষ্টি হয়।
পরদিন বুধবার সকালে পুলিশ হ্রদ থেকে শিশুটির মৃতদেহ উদ্ধার করে। জিজ্ঞাসাবাদে অঞ্জলি ভেঙে পড়েন এবং কন্যাকে হ্রদে ফেলে দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন।
পুলিশ জানায়, অঞ্জলি একাই এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। তার সঙ্গী আলকেশকে রাত ২টার দিকে শিশুটি নিখোঁজ হওয়ার কথা জানানো হয়। অঞ্জলি অভিযোগ করেন, আলকেশ বারবার তার সন্তানকে নিয়ে কটূক্তি করতেন এবং সেই মানসিক চাপে তিনি এই কাজ করেছেন।
২৮ বছর বয়সী অঞ্জলির বাড়ি উত্তরপ্রদেশের বারাণসীতে। স্বামী থেকে আলাদা হওয়ার পর তিনি আজমেরে চলে আসেন এবং প্রেমিক আলকেশের সঙ্গে বসবাস শুরু করেন। আজমেরের একটি হোটেলে রিসেপশনিস্ট হিসেবে কাজ করেন তিনি; একই হোটেলে কাজ করেন আলকেশও।
খ্রিস্টানগঞ্জ থানার পুলিশ অঞ্জলিকে গ্রেপ্তার করেছে এবং তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ খতিয়ে দেখছে আলকেশ শিশুটির হত্যাকাণ্ডে কোনোভাবে জড়িত ছিলেন কিনা।