মোঃ মুকিম উদ্দিন জগন্নাথপুর প্রতিনিধিঃ-
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের কুশিয়ারা নদীর উপর নির্মিত সেতুর ল্যাম্পপোস্টে জলে না কোন আলো পুরোপুরি অন্ধকারে থাকে। দীর্ঘ দিন ধরে এ সেতুর ল্যাম্পপোস্টে বাতি থাকলেও কোন আলো জ্বলছেনা। ফলে সন্ধার পর সেতু এলাকা ডুবে যায় ঘোর অন্ধকারে। এতে বাড়ছে দুর্ঘটনা, ছিনতাই ও মাদকসংক্রান্ত অপরাধের ঝুঁকি। এছাড়াও আউশকান্দি, রানীগঞ্জ, জগন্নাথপুর, সুনামগঞ্জ মহাসড়কের বিভিন্ন অংশেও পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা নেই। প্রতিদিন শত যানবাহন ও পথচারী এই সেতু ব্যবহার করছে।
রবিবার (১৪সেপ্টেম্বর) রাত ৮ টার দিকে সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, রানীগঞ্জ ইউনিয়নের কুশিয়ারা নদীর উপর নির্মিত সেতুর পুরো এলাকাই অন্ধকারে ঢাকা। কোথাও বাতি জ্বলছেনা। সেতু ও আশপাশের পুরো এলাকা ঘোর অন্ধকার।যা যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার কারন হতে পারে। সিলেট বিভাগের সবচেয়ে বড় এসেতু উদ্বোধনের পর হাওরবাসীর সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় এক যুগান্তকারী ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছিল। রাজধানী ঢাকার দুরত্ব কমে যায় ৫৫ কিলোমিটার, অন্যদিকে সুনামগঞ্জের পাশের জেলা হবিগঞ্জে দুই ঘন্টায় যাতায়াত করেন জেলাবাসী। কুশিয়ারা নদীর ওপর নির্মিত রানীগঞ্জ সেতুটি উদ্বোধনের পরের দিন থেকে প্রথমে একটি পরে আরেকটি এভাবে একে একে প্রায় সব লাইট নস্ট হয়ে যায়। এনিয়ে উদ্বোধনের পর থেকে ধারাবাহিক এসব ঘটনায় জেলার মানুষের মধ্যে চলছে মিশ্র আলোচনা।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উঠেছে সমালোচনার ঝড়।
স্থানীয়রা জানান, সেতু উদ্বোধনের পর থেকে প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত হাজার হাজার যাত্রী ও যানবাহন এ সেতু দিয়ে চলাচল করছে। বহুল প্রত্যাশিত সেতুটি দেখতে হাজার হাজার দর্শনার্থী আসছেন এখানে। কিন্তু সন্ধ্যা হলেই অন্ধকারে ঢেকে যায় দুই পাড়ের কয়েক কিলোমিটার সংযোগ সড়কসহ পুরো সেতুটি।ঘটছে চুরি, ছিনতাইয়ের ঘটনা। এতে নিরাপত্তাহীনতায় পড়েছেন সেতুতে চলাচলকারী ও দর্শনার্থীরা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ১৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৭০২ মিটার দৈর্ঘ এ সেতু ও সড়ক পাড়াপারের সময় রাখা হয়নি নূন্যতম নিরাপত্তা ব্যবস্থা। লাইটিং সচল না হওয়ায় নিরাপত্তাহীনতায় চলাচল করতে হচ্ছে সেতু পারাপারকারীদের।
সেতুর উত্তর প্রান্তে গন্ধর্বপুর গ্রামের বাসিন্দা হাজী আখলই জানান, সেতু চালু হওয়ায় আশায় বুক বেধেঁ ছিলেন। কিন্তু উদ্বোধনের পরপর লাইট না থাকায় তারা আশাহত হয়ে পড়েছেন। সেতু ও চলাচলকারীদের নিরাপত্তায় সেতুর দুই প্রান্তে ২টি পুলিশ বক্স স্থাপন জরুরি। তাছাড়া সেতুতে কোনো যানবাহন বা মানুষ যাতে না দাঁড়াতে পাড়ে সে দিকে প্রশাসনকে নজর দিতে হবে।
সেতুর দক্ষিণ প্রান্তের আলমপুর গ্রামের বাসিন্দা মনজু মিয়া ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সন্ধ্যার পর অন্ধকারে মানুষ নিরাপত্তাহীনতার মধ্য দিয়ে আসা যাওয়া করছে। এরপর রয়েছে চুরিসহ নানা অপরাধ হওয়ার সম্ভাবনা। প্রশাসনের নজরদারির অভাব ও উদাসীনতায় এসব ঘটনা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। স্থানীয়ভাবে পুলিশ ক্যাম্প ও লাইটিং ব্যবস্থা দ্রুত সচল করা প্রয়াজন।
লাইটিং এর সভাপতিত্বে থাকা রানীগঞ্জ বাজারের বাসিন্দা জমিরুল মিয়া বলেন, রানীগঞ্জ সেতুর লাইটিং এর দায়িত্বে আমি আছি। এই লাইটগুলো এমএম বিল্ডার্স এ কাজ করার কথা। সট সার্কিট থেকে লাইটে সমস্যা হয়েছে। সুইচ দিলে আগুন লেগে যায়। এ বিষয়ে বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী স্যার ভাল বলতে পারবেন।
এ বিষয়ে সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপদ বিভাগ সওজ এর নির্বাহী প্রকৌশলী ড. মোহাম্মদ আহাদ উল্লাহ বলেন, রানীগঞ্জ সেতুতে দীর্ঘ দিন ধরে লাইটগুলো জ্বলেনা। এ লাইটগুলো মেরামত করা হবে। লাইটগুলো মেরামতের জন্য বরাদ্ধ দেওয়া হবে।