হাসিনুজ্জামান মিন্টু, স্টাফ রিপোর্টার:-
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে নকল পুতুল-মুদ্রা দেখিয়ে প্রতারণার অভিযোগে পাঁচজনকে আটকের পর মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানোর ঘটনার ৩ দিন পর এক পুলিশ কর্মকর্তার অডিও ফাঁস হয়েছে। সেখানে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
অডিও ফাঁসের পর জানা গেছে, রাণীশংকৈল থানার ওসি আরশেদুল হক ও এসআই শহিদুল ইসলামসহ কয়েকজন কর্মকর্তার যোগসাজশে আটককৃত ব্যক্তিদের কাছে থাকা ৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করার পাশাপাশি ক্রেতাদের প্রতারক বানিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশকে তথ্য সরবরাহকারী আকাশ নামে এক ব্যক্তির সাথে রাণীশংকৈল থানার এসআই শহিদুল ইসলামের কথোপকথনের ফাঁস হওয়া অডিওতে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য মিলেছে।
ফাঁস হওয়া ১৩ মিনিট ৪২ সেকেন্ডের কল রেকর্ডটি গতকাল বৃহস্পতিবার রাত থেকেই সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। অডিও ফাঁসের পর থেকে স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ বিরাজ করছে।
অডিও কলে ওই ঘটনার তথ্য সরবরাহকারী আকাশকে বলতে শোনা যায়- আটককৃতদের কোন দোষ নেই। তাদের কাছে ৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা ছিল। আকাশের সাথে পুলিশের সাথে চুক্তি হয় তাদের ধরিয়ে দিলে আকাশকে লাখে ত্রিশ হাজার টাকা দেয়া হবে, কিন্তু তা দেয়া হয়নি। উত্তরে এসআই শহিদুল ইসলামও আটককৃতদের নির্দোষ থাকার কথা স্বীকার করেন এবং তাদের কাছে ৩ লাখ টাকা পাওয়া গেছে বলে, যা তাদের ফেরত দেয়া হয়েছে বলে জানান। তখন তারা (আটকৃতরা) খুশি হয়ে ওসিকে ৫০ হাজার টাকা দেয়।
এছাড়াও অর্থ লেনদেনসহ আরও নানা বিষয়ে দুইজনকে কথা বলতে শোনা যায় ওই কল রেকর্ডটিতে।
এ বিষয়ে এসআই শহিদুল ইসলাম কল রেকর্ডের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘ওসি সাহেবের নির্দেশেই আকাশের সাথে কথা হয়। এখানে আমার কোন দোষ নেই।’
জানতে চাইলে রাণীশংকৈল থানার সার্কেল (এসপি) শ্নেহাষীশ কুমার দাস জানান, ‘বিষয়টি অবগত হয়েছি। তদন্ত করে পুলিশ সুপারের নির্দেশে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম জানান, ‘ঘটনার বিষয়টি নজরে এসেছে। তদন্ত করা হচ্ছে। এর সাথে জড়িত থাকলে ছাড় নয়, তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
উল্লেখ্য, এর আগে গত মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত সোনালি রঙের মূর্তি, পুরোনো নকশার রুপার মুদ্রা ও নগদ টাকাসহ আসামিদের আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন রাণীশংকৈল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরশেদুল হক।