মোঃ নাজমুল ইসলাম, আওয়াজ সিলেট, প্রতিনিধিঃ-
গ্রেটার নয়ডার সিসরা গ্রামে এক ২৬ বছর বয়সী তরুণীকে যৌতুকের জন্য স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন আগুনে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠেছে। গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী অন্য হাসপাতালে নেয়ার সময় পথেই তাঁর মৃত্যু ঘটে। নিহত নারীর নাম নিক্কি। তিনি ২০১৬ সাল থেকে সিসরার বাসিন্দা বিপিনের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ ছিলেন।
বিপিনকে প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ, এবং আরও তিনজন—শ্বশুর সতবীর, শাশুড়ি দয়া, ও ভাশুর রোহিতের বিরুদ্ধেও মামলা রুজু করা হয়েছে।
নিক্কির বড় বোন কাঞ্চন, যিনি একই পরিবারের আরেক সদস্যকে বিয়ে করেছিলেন, অভিযোগ করেছেন—নিক্কির বিয়ের সময় তাঁদের পরিবার একটি ব্র্যান্ডেড এসইউভি ও অন্যান্য মূল্যবান উপহার দিলেও শ্বশুরবাড়ির দাবি থামেনি।
কাঞ্চন বলেন, “বিয়ের পর তারা ৩৫ লাখ টাকা দাবি করে। আমরা আরও একটি গাড়ি দিই, তবুও নির্যাতন বন্ধ হয়নি।”
তিনি আরও জানান, গত বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) রাতে বিপিন নিক্কিকে মারধর করে অচেতন করে দেয়, এরপর দাহ্য পদার্থ ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। ঘটনার সময় কাঞ্চন ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও তিনি বোনকে বাঁচাতে পারেননি। প্রতিবেশীরা দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান, কিন্তু নিক্কি শেষ পর্যন্ত মারা যান।
ঘটনার পর সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে নিক্কির ছোট ছেলের একটি ভিডিও, যেখানে শিশুটি বলছে:
“পাপা মম্মিকে লাইটার দিয়ে জ্বালিয়ে মেরে ফেলেছে।”
এই ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে ব্যাপক জনরোষ তৈরি করেছে।
নিহতের কাকা রাজ সিং জানান, আগেও বহুবার পঞ্চায়েতের মাধ্যমে আপস-মীমাংসা করা হয়েছে, কিন্তু নির্যাতন বন্ধ হয়নি।
তিনি বলেন, “দুই বোনই নিয়মিত মারধরের শিকার হতো। কোনো আপস কাজে দেয়নি।”
গ্রেটার নয়ডার অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার (ADCP) সুধীর কুমার জানান, “২১ তারিখ রাতে ফোর্টিস হাসপাতাল থেকে একটি মেমো পাওয়া যায় যে এক নারী দগ্ধ অবস্থায় ভর্তি হয়েছেন। পরে তাঁকে দিল্লির সফদারজং হাসপাতালে রেফার করা হয়, কিন্তু রাস্তায় তাঁর মৃত্যু হয়। বোনের অভিযোগের ভিত্তিতে চারজনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে। স্বামী বিপিনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, অন্যদের ধরতে টিম গঠন করা হয়েছে।”
এই নির্মম ঘটনায় এলাকায় তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। পরিবারের সদস্যরা দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে, ২৩ আগস্ট।