রবিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:৪৭ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: এ রহমান – আওয়াজ সিলেট প্রতিনিধি।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের দীর্ঘ ইতিহাসে অসংখ্য ছাত্রনেতা জন্ম নিয়েছেন। তাদের মধ্যে অনেকে রাজনীতিকে ব্যবহার করেছেন ব্যক্তিগত স্বার্থে, আবার অনেকেই তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে থেকে আদর্শিক সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন। সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ দ্বিতীয় শ্রেণির মধ্যে পড়েন— কারণ তিনি নিজেকে কর্মীদের সুখ-দুঃখের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রেখেছেন।
রাজনৈতিক জীবনের শুরু
ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পর থেকেই রাহেল সিরাজ সিলেটের মাটিতে আওয়ামী রাজনীতির একজন দৃঢ় কণ্ঠ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। ছোটবেলা থেকেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শ আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বুকে লালন করে তিনি রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। ছাত্রলীগের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিনি প্রমাণ করেছেন যে নেতৃত্ব মানে শুধু পদ নয়, বরং কর্মীদের বিশ্বাস ও ভালোবাসা অর্জন করা।
দুঃসময়ে নির্ভীক ভূমিকা
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট দেশে বড় রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়। তখন দেশের অনেক প্রভাবশালী নেতা নীরব থাকলেও রাহেল সিরাজ ছিলেন ভিন্নমত। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আওয়ামী লীগের পক্ষে সক্রিয়ভাবে অবস্থান নেন এবং নানা প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও আওয়ামী পরিবারের পক্ষে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যান।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ক্ষমতাচ্যুতির পর এ ধরনের দৃঢ় অবস্থান রাখা একজন তরুণ নেতার জন্য অত্যন্ত সাহসিকতার বিষয়, যা প্রমাণ করে তার রাজনৈতিক বিশ্বাস ও অঙ্গীকার কতটা গভীর।
কর্মীদের আস্থার ঠিকানা
রাহেল সিরাজকে নিয়ে সাধারণ কর্মীদের আবেগ গভীর। বিগত এক বছরে তিনি সিলেট জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও কলেজে ছাত্রলীগ কর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। কারও পারিবারিক সমস্যা, কারও শিক্ষাজনিত সংকট কিংবা রাজনৈতিক চাপে পড়া— প্রতিটি ক্ষেত্রেই তিনি কর্মীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
একজন উপজেলা পর্যায়ের ছাত্রলীগ কর্মী বলেন—
> “বড় বড় নেতারা যখন খোঁজও নেননি, তখন রাহেল ভাই প্রায় প্রতিদিন আমাদের খবর নিয়েছেন। আমরা জানি, আমাদের যে কোনো সমস্যায় তিনিই প্রথম ছুটে আসবেন।”
আদর্শের প্রতি অঙ্গীকার
রাহেল সিরাজ বারবার বলেছেন যে রাজনীতি মানে ক্ষমতার লোভ নয়, বরং মানুষের পাশে থাকা। তার ভাষায়—
> “ছাত্রলীগ আমার পরিবারের নাম। আমার প্রতিটি কর্মী আমার আপনজন। রাজনীতির আসল কাজ হলো মানুষের পাশে দাঁড়ানো, তাদের কষ্ট লাঘব করা।”
তরুণ প্রজন্মের অনুপ্রেরণা
আজকের তরুণরা রাজনীতিতে হতাশ হলেও রাহেল সিরাজ তাদের জন্য এক ভিন্ন উদাহরণ। তার কাজ, সংগ্রাম আর ত্যাগ তরুণদের নতুন করে ছাত্রলীগের প্রতি আস্থা জাগাচ্ছে। সিলেটের রাজনীতিতে তিনি শুধু একজন সংগঠকই নন, বরং আগামী দিনের সম্ভাবনাময় নেতৃত্ব।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ইতিহাসে রাহেল সিরাজ এক নতুন নাম, যিনি প্রমাণ করেছেন সত্যিকারের রাজনীতি মানে কর্মীদের সঙ্গে থাকা। দুঃসময়ে তার সাহসী ভূমিকা, তৃণমূলের প্রতি দায়বদ্ধতা আর আদর্শের প্রতি প্রতিশ্রুতি তাকে আলাদা মর্যাদা দিয়েছে। ভবিষ্যতের বাংলাদেশে ছাত্ররাজনীতির যে পরিবর্তন দরকার, তার অগ্রভাগে রাহেল সিরাজের মতো নেতাদের নাম উচ্চারিত হবে— এ কথা বলতেই দ্বিধা নেই।
