গত ৩০ জুন ২০২৫ তারিখ দুপুর ১২টার দিকে মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের বাঘমারা গ্রামের ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরী নিখোঁজ হয়। জানা গেছে, সিলেট থেকে ছেড়ে আসা পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনটি কুলাউড়া স্টেশনে থামার পর থেকেই ওই মেয়ের আর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরিবারের সদস্যরা বারবার মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও মেয়েটির ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
নিখোঁজ হওয়ার পর পরিবারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি চালানো হয়। কোনো সন্ধান না পেয়ে কুলাউড়া রেলওয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি নং-৫৩) করা হয়। সেখানে মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলা হয়।
ঘটনার পর এক অজানা যুবক একটি ফেইক ইমো আইডি (নাম: “মায়াবী পরী”) ব্যবহার করে মেয়ের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে। সে দাবি করে, মেয়েটি তার হেফাজতে আছে এবং মুক্তির জন্য ২০,০০০ টাকা জামানত দিতে হবে। টাকা দিলে মেয়েকে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানায়। এরপর ওই যুবক পরিবারের কাছে বিকাশ নম্বর ০১৮৫১২০১০২০ পাঠায় এবং জানায়, সে বর্তমানে গাজীপুরে অবস্থান করছে। ভয়ভীতি সৃষ্টি করতে সে নিজেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্য পরিচয় দেয় এবং সেনাবাহিনীর পোশাক পরিহিত একটি ছবি পাঠায়।
পরিবারের সন্দেহভাজন তথ্য ও বিকাশ নম্বর বিশ্লেষণ করে কমলগঞ্জ বাঘমারা এলাকার গর্ব, বাংলাদেশ পুলিশের আইটি ইনচার্জ, রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্স সিলেট এ কর্মরত মোঃ নুর আলম এর সহযোগিতা চাওয়া হয়। পাশাপাশি বাঘমারা এলাকার সচেতন তরুণ ও মুরব্বিরা — আব্দুল হান্নান, তাঁর ভাতিজা শাওন, এবং প্রবীণ মুরব্বি নুরু শর্দার সাহেবের নাতি দেলোয়ার ভাই — সক্রিয়ভাবে উদ্ধার অভিযানে অংশ নেন।
তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সিলেট কদমতলী এলাকা থেকে অপহৃত কিশোরীকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়। এরপর মোঃ নুর আলম অভিযুক্ত যুবকসহ কিশোরীকে মেয়ের পরিবারের জিম্মায় নিয়ে কুলাউড়া রেলওয়ে থানায় হস্তান্তর করেন।
কুলাউড়া রেলওয়ে থানার এসআই দীপক জানিয়েছেন, “মেয়েটিকে থানায় পৌঁছানোর পর আমরা আইনি প্রক্রিয়া অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”
ইতোমধ্যে মেয়ে এবং ছেলে কুলাউড়া রেলওয়ে থানায় পৌঁছানো হয়ে গেছে
মেয়ের পরিবার জানিয়েছে, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কুলাউড়া রেলওয়ে থানায় পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।